গৌরব ও ঐতিহ্যের পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার

প্রকাশঃ এপ্রিল ১১, ২০১৫ সময়ঃ ৯:৪৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৫৭ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

index.jpg index.jpg indexপালবংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে  তৈরি করেছিলেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।  এটি সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার নামেও পরিচিত। বর্তমানে এটি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বাদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত।

আবিষ্কৃত হওয়ার সময়ে এর অবস্থান ছিল পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুন্ড্রনগর (বর্তমান মহাস্থানগড়)এবং অপর শহর কোটিবর্ষ (বর্তমান বানগড়)এর মাঝামাঝিতে।

স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন ১৮৭৯ সালে।  ১৯৮৫ সালে এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয় ইউনেস্কো।

বৌদ্ধ বিহারটির ভূমি-পরিকল্পনা চতুষ্কোনাকার। উত্তর ও দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ২৭৩.৭ মি এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৭৪.১৫ মি। এর চারদিক চওড়া সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল বরাবর অভ্যন্তর ভাগে সারিবদ্ধ ছিল ছোট ছোট কক্ষ । উত্তর দিকের বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ।

এই কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রতিটি মেঝে বিছানো ইঁটের ওপর পুরু সুরকী দিয়ে অত্যন্ত মজবুত ভাবে তৈরি করা হয়েছিলো। সর্বশেষ যুগে ৯২টি কক্ষে মেঝের ওপর বিভিন্ন আকারের বেদী নির্মাণ করা হয়। এ থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রথম যুগে সবগুলো কক্ষই ভিক্ষুদের আবাসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীকালে কিছু কক্ষ প্রার্থনাকক্ষে রুপান্তর করা হয়েছিলো।

বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর রয়েছে প্রধান ফটক। এর বাইরের ও ভেতরের দিকে একটি করে স্তম্ভ সম্বলিত হলঘর এবং পাশে ছোট ছোট কুঠুরি আছে। এই কুঠুরিগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত। প্রধান ফটক এবং বিহারের উত্তর-পূর্ব কোনের মাঝামাঝি অবস্থানে আরও একটি ছোট প্রবেশ পথ ছিলো। এখান থেকে ভেতরের উন্মুক্ত চত্বরে প্রবেশের জন্য যে সিঁড়ি ব্যবহৃত হত তা আজও বিদ্যমান।

উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম বাহুতেও অনুরুপ সিঁড়ির ব্যবস্থা ছিলো। এদের মাঝে কেবল পশ্চিম বাহুর সিঁড়ির চিহ্ন আছে। উত্তর বাহুর প্রবেশ পথের সামনে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত একটি পুকুর ছিল। ১৯৮৪-৮৫ সালের খননে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম নির্মাণ যুগের পরবর্তী আমলে এ পুকুর খনন করা হয় এবং এসময় এ অংশের সিঁড়িটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে পুকুরটি ভরাট করে দেয়া হয়। এর এক পাশে রয়েছে জাদুঘর। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধাতু নির্মিত মূর্তি এবং আসবাবপত্র। এখানে রয়েছে হেলিকাপ্টার নামার বিশেষ স্থান হেলিপ্যাড।

যেভাবে যাবেন:

এটি দেখার জন্য সড়কপথে বাসে বদলগাছি হয়ে পাহাড়পুর আসুন। সময লাগবে ৪০ মিনিট। বৌদ্ধবিহার ঘুরেফিরে দেখতে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। ইচ্ছে করলে সারাটা দিন বৌদ্ধবিহার কম্পাউন্ডে কাটাতে পারেন। এখানে প্রবেশমূল্য দুই টাকা। অপর দিকে জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে এর দূরত্ব পশ্চিমদিকে মাত্র ৫ কিলোমিটার। এখান থেকে অটোরিক্সা করেও যাওয়া যায়।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G